দেবতাখুম—একটা নাম, যেটা উচ্চারণেই পাহাড়ি নীরবতা আর অ্যাডভেঞ্চারের গন্ধ পাওয়া যায়। আমি, রাকিব আর সিদ্ধার্থ মিলে এবার রওনা দিলাম এই রহস্যময় জায়গার খোঁজে, যেখানে সূর্যের আলো ঢুকে যেতে ভয় পায়, আর ঝর্ণার শব্দই হয়ে ওঠে প্রকৃতির ভাষা।
ঢাকা থেকে রাতের বাসে বান্দরবান, তারপর ইজিবাইকে রাজার মাঠ, সেখান থেকে সিএনজি করে রোয়াংছড়ি হয়ে পৌঁছালাম কচ্ছপতলী। রাতটা কাটালাম বাঁশের কটেজে—যার ব্যালকনি থেকে দেখা যায় থারাংছা নদী আর চারপাশের জুম চাষের দারুণ সব দৃশ্য।
রাতের খাবারে অর্ডার করলাম ব্যাম্বু চিকেন—অসাধারণ স্বাদ! পরদিন খুব সকালে গাইড জয়দা আমাদের নিয়ে রওনা দিলেন দেবতাখুমের দিকে। পুলিশ ও আর্মি চেকপোস্টে অনুমতি নিয়ে ট্রলারে যাত্রা শুরু—বর্ষার কারণে স্রোত প্রবল, পথে পাথরের ধাক্কাও ছিল, কিন্তু এই ভয়টাই বোধহয় অ্যাডভেঞ্চারকে স্পর্শ করে।
দেবতাখুমে পৌঁছে ঘুরে দেখলাম খুমের গভীর শান্ত জল, যেখানে ৭০–৮০ ফিট গভীরতা। জানলাম মার্মা আদিবাসীরা এখানে একটি পাথর পূজা করেন, যাতে পর্যটকদের ক্ষতি না হয়।
তারপর রওনা হলাম এমন একটি ঝর্ণার দিকে, যেখানে আগে নাকি কেউ যায়নি। ভয়ংকর ট্রেক শেষে যখন সেই ঝর্ণার সামনে দাঁড়ালাম, তখন মনে হচ্ছিল—এই একটা মুহূর্তের জন্যই আসা।
শেষে গেলাম শীলবান্ধা ঝর্ণায়, তুলনায় সহজ ট্রেক, কিন্তু একইরকম তৃপ্তিদায়ক। পাহাড়ি পানির শীতল স্পর্শ আর ঝর্ণায় রংধনুর খেলা যেন হৃদয়ে এক প্রশান্তি রেখে দিল।