এবার নিয়ে গুনে গুনে নয়বার হলো আমার কুয়াকাটা ভ্রমণ। কাজেই বেশ কিছু অভিজ্ঞতা আমার হয়েছে, এটাই স্বাভাবিক। ভেবে দেখলাম নতুন যারা সাগরকন্যা কুয়াকাটা ভ্রমণে যেতে চায় তাদের জন্য দরকারী কিছু তথ্য জানিয়ে রাখা উচিৎ। আর সে চেষ্টাই করেছি আমার এবারের কুয়াকাটা সফর শেষে।
দিনটা ছিলো পহেলা বৈশাখের দিন। হঠাৎ করেই প্ল্যান হলো সমুদ্রে যেতে হবে। যেই ভাবা সেই কাজ। রাতের গাড়িতে রওয়ানা দিলাম সাগরকন্যার উদ্দেশ্যে। পরদিন সূর্যোদয়ের আগেই পৌঁছে গেলাম আর উঠে পড়লাম আগে থেকেই বুকিং দিয়ে রাখা হোটেলে। একটু রেস্ট নিয়েই চলে গেলাম সাগর পাড়ে। বলাই বাহুল্য প্রায় সারাটাদিনই ছিলাম সাগরপাড়ে।
নতুন যারা কুয়াকাটা ভ্রমণ করতে চান, তারা প্রথমেই যে চিন্তায় পড়েন তাহলো থাকবো কোথায়? এক্ষেত্রে প্রথমে নিজেকেই কয়েকটা প্রশ্ন করুন আপনি। প্রথমত, আপনি কি সমুদ্র সৈকতের খুব কাছাকাছি থাকতে চান? আপনি কি আপনার রুমে শুয়ে বসে সাগরের ঢেউ দেখতে চান? আবার সুন্দর ফ্যামিলি ফ্রেন্ডলি পরিবেশ চান? এই সবগুলো প্রশ্নের উত্তর যদি হ্যাঁ হয়, তাহলে আপনাকে আমি একটি হোটেল সাজেস্ট করতে পারি।
আমি আমার একাধিকবারের কুয়াকাটা ভ্রমণে ঘুরে ফিরে একটি হোটেলেই থেকেছি। হোটেলটির নাম হোটেল সী প্যালেস। কুয়াকাটার মেইন সমুদ্র সৈকতের খুব কাছাকাছি হওয়ায় আমার সব সময়ের পছন্দ এই হোটেল। আর বারবার একই হোটেলে যাওয়ার কারণে হোটেল ম্যানেজার রুবেলের সাথে আমার সম্পর্ক হয়ে গেছে বন্ধুত্বপূর্ন।
হোটেলের তৃতীয় তলার ২টা রুম আমি বেশি পছন্দ করি। কারণ এই দুইটা রুমেই শুয়ে বসে দেখা যায় সমুদ্রের ঢেউ। এই হোটেলটি নিয়ে আমার ভিডিওটি দেখে নিতে পারেন যাওয়ার আগে। সেখানে হোটেল ম্যানেজারের নাম্বারও দেওয়া আছে। চাইলে অগ্রীম বুকিং দিয়ে রাখতে পারেন।
কুয়াকাটার হোটেল এবং রেস্টুরেন্ট রিভিউ
কুয়াকাটা পৌঁছে হোটেলে উঠে ফ্রেশ হয়ে সমুদ্র দেখতে বেরিয়ে পড়বেন এটাই স্বাভাবিক। সাধারণত সকালের খাবারটা বেশিরভাগ মানুষ কাউয়ার চরের ওদিকে খেয়ে থাকেন। আর সেই সাথে উপভোগ করেন সাগরকন্যার সৌন্দর্য। আমি ২টা ভিডিওতে দেখিয়েছি “কুয়াকাটার সৌন্দর্য” এবং “কুয়াকাটায়া যা দেখতেই হবে”। এছাড়াও আমি কুয়াকাটার রাখাইনদের ইতিহাস এবং কুয়াকাটা নামকরণের ইতিহাসও দেখিয়েছি। ভিডিওগুলো দেখে নিলে আপনার কুয়াকাটা সফর আরো সহজ হবে আশা করি।
সকালে কাউয়ার চরে খাওয়া এবং রাতে বীচের ধারে বসে মাছের গ্রিল আর বারবিকিউ খাওয়ার সুব্যবস্থা থাকায় আমার খুব একটা ভাবতে হয়না এ নিয়ে। তবে দুপুরের খাওয়া নিয়ে প্রথম দিকে বেশ কয়েকবার বেকায়দায় পড়েছি আমি। তবে শেষ কয়েকবারে একটা রেস্টুরেন্ট পেয়ে গেছি মনের মতো। রেস্টুরেন্টটির নাম আরাবেল্লা রেস্টুরেন্ট। এখানে খাবারে কোয়ালিটি আমার কাছে পাশের অন্যান্য রেস্টুরেন্টের তুলনায় বেশ ভাল মনে হয়েছে। তাছাড়া এখানে সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে, আপনি সামুদ্রিক মাছ আর মাংসের সাথে খুব চমৎকার সবজিও পেয়ে যাবেন। কুয়াকাটায় কোথায় থাকবেন আর কোথায় খাবেন – এই ভিডিওতে বলেছি এই রেস্টুরেন্টের বিস্তারিত।
সবশেষে বলবো, কুয়াকাটার সৌন্দর্য খুব ভালভাবে উপভোগ করতে চাইলে একটু অফ সিজন দেখে চলে যাবেন। সাথে নিয়ে যাবেন প্রিয়জনকে। সিজনে কুয়াকাটায় ভিড় বেশি থাকায়, থাকা এবং খাওয়া খরচ বেশি আসবে সেটাই স্বাভাবিক। আপনার ভ্রমণ সুন্দর হোক।